যেকোনো ধরনের রান্না করতে গেলেই যে উপাদানটি সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়, তা হচ্ছে তেল। রান্নার জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের ভোজ্য তেল ব্যবহার করে থাকি। তার মাঝে কিছু আছে ভেজিটেবল অয়েল যেমন- সয়াবিন তেল, সরিষার তেল ইত্যাদি। তেমনি বিভিন্ন ফল থেকে প্রাপ্ত তেল ও রান্নার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন অলিভ অয়েল, অ্যাভোকাডো অয়েল ইত্যাদি । কিন্তু বিভিন্ন ধরনের তেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে নানা রকম বিষয় বিবেচনায় রাখতে হয় যাতে রান্নার সময় তাপমাত্রার কারণে সেই তেল এর রাসায়নিক উপাদানগুলো কোনভাবে ভেঙে না যায় এবং রান্নার পুষ্টিগুণ যাতে বজায় থাকে।

তাহলে আজকে জেনে নেওয়া যাক, তেল দিয়ে রান্না করার ক্ষেত্রে তেলের স্মোকিং পয়েন্ট ব্যাপারটা কি। সহজভাবে বলতে গেলে আমরা যখন কোন ভাজাপোড়া বা রান্নার কাজে তেল গরম করে থাকি তখন যে তাপমাত্রায় সেই তেলটি গরম হয়ে ধোয়া বাষ্পে পরিণত হওয়া শুরু করে তাকে স্মোকিং পয়েন্ট বলা যেতে পারে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই স্ফুটনাংক বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। 

এখন বিষয়টা হচ্ছে সাধারণত গৃহস্থালি রান্নাবান্না করার ক্ষেত্রে আমরা অতিরিক্ত তাপমাত্রার ব্যবহার করি না। সাধারণ রান্নার ক্ষেত্রে স্মোকিং পয়েন্ট ব্যাপারটি খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে কাজ করে না কিন্তু যখন আমরা উচ্চ তাপমাত্রায় কোন খাবার প্রস্তুত করি যেমন - মাংস ভাজা-পোড়া অথবা বিভিন্ন স্ন্যাকস কে ডিপ ফ্রাই করা- সে ক্ষেত্রে স্মোকিং ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হয়।

কোনো তেলকে যদি অতিরিক্ত গরম করা হয়, তখন স্মোকিং পয়েন্ট অতিক্রম করার পর সাধারণত সেটির বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানগুলো ভাঙতে বা নষ্ট হয়ে যেতে শুরু করে। ফলশ্রুতিতে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বা খাবারের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে পরিণত হতে পারে। তাই অতিরিক্ত তাপমাত্রায় কাজ করার সময় খেয়াল রাখতে হবে এমন তেল ব্যবহার করতে যার স্মোকিং পয়েন্ট সাধারণত একটু বেশি হয়ে থাকে এবং আমরা কাঙ্ক্ষিত তাপমাত্রায় যাতে তেলটিকে স্বাভাবিক অবস্থায় পাই।

একটি সহজ উদাহরণ দিলে ব্যাপারে বোঝা যাবে, সাধারণত রান্না বান্নার ক্ষেত্রে আমরা চাইলেই অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারি কিন্তু যখন আমরা উচ্চ তাপমাত্রায় কোন ভাজাপোড়া বা ডিপ ফ্রাই এর কাজ করব তখন আমাদের অলিভ অয়েল এর পরিবর্তে বিভিন্ন হাই স্মোকিং পয়েন্ট যুক্ত তেল যেমন - সয়াবিন অয়েল বা অন্যান্য ভেজিটেবল অয়েল ব্যবহার করা উচিত।

এই লিংক থেকে আপনারা জেনে নিতে পারবেন যে আমাদের ব্যবহৃত সাধারণ তেলগুলোর মাঝে কোন তেলের স্মোকিং পয়েন্ট কত। এই স্মোকিং পয়েন্ট নিয়ে তথ্য জানা থাকলে আপনারা সহজেই রান্নার ক্ষেত্রে স্মোকিং পয়েন্টের ব্যাপারটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন কেননা এর মাধ্যমেই আপনি আপনার খাবারটিকে স্বাস্থ্যকর রাখতে পারেন।

খাবার হচ্ছে এমন একটি জিনিস যা শুধু আমাদের ক্ষুধাই নিবারণ করে না সাথে এটি আমাদের নানা ধরনের ইন্দ্রিয় জাগ্রত করে দেয় এবং একই সাথে কোন একটি জায়গার সম্পর্কে একটি স্মৃতি তৈরি করে। সেই খাবার যদি সুস্বাদু হয় তবে আমাদের সেই স্মৃতি হয় চমৎকার আর খাবার যদি কোনো কারণে আমাদের আশানুরূপ না হয় তবে সে ক্ষেত্রে আমাদের সেখানকার স্মৃতি ঠিক তেমন চমৎকার হয়না। 

পৃথিবীর কোথাও না কোথাও সবসময়ই ডিনার করার সময়। কোন একটি দেশের ঘুরতে যাওয়ার পেছনে সেখানকার চমৎকার প্রাকৃতিক কিংবা কৃত্রিম সৌন্দর্য গুলো যেমন ভূমিকা রাখে তেমনি পাশাপাশি সেই দেশের বিভিন্ন রকম মজাদার খাবার কিংবা খাদ্যাভ্যাস একই রকম ভাবে ভূমিকা রাখে। রোমে গিয়ে আপনি রোমান ফোরামে ঠিক যেখানে সিজার হেঁটেছিলেন সে জায়গাগুলোতে তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে হাঁটতে পারেন এবং একই সাথে সিস্টিন চ্যাপেল এ মাইকেলেঞ্জেলোর করা স্বর্গীয় কারুকার্য এরদিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার মতো রোমাঞ্চকর কাজ করতে পারেন। কিন্তু তারপরও এখানকার খাদ্যাভ্যাস ও খাবারের যে মেনু তা আপনি ভুলতে পারবেন না। কোন একটি জাতি কিংবা দেশ বা মহাদেশ কতটা সুন্দর তা বোঝার কিংবা জানার জন্য চমৎকার একটি উপায় হচ্ছে তাদের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে জানা এবং তাদের খাবারের মেনু ট্রাই করে দেখা।

কোন একটি স্থানের খাবার শুধু সে জায়গার স্মৃতিই রোমন্থন করায় না, খাবার কোন জায়গার অতীত এবং গভীর ইতিহাস সম্পর্কে তুলে ধরে। কোন একটি দেশ বা জাতির তাদের ভাষা, পোশাক এমনকি তাদের ধর্ম পরিবর্তন করার পরেও যে জিনিসটি তাদের স্বকীয়তা তুলে ধরতে সক্ষম সেটি হচ্ছে সে দেশ বা জাতির খাদ্যাভাস এবং তাদের খাবার সমূহ। বিশেষ করে তরতাজা খাবারের যে বাজার রয়েছে সেগুলো কোনো দেশ বা জাতির অতীত এবং ভবিষ্যৎ এর পরিচয় বহন করে। 

কোন দেশ বা মহাদেশে যখন কোন পর্যটক ঘুরতে যায় তখন সেখানকার এ খাবারগুলো এবং সেখানকার মানুষের যে খাদ্যাভ্যাস রয়েছে সেগুলোর সাথে সেই পর্যটকদের একটি বিশেষ এবং গভীর সম্পর্ক হয়ে যায়। কারণ কোন একটি জায়গায় গিয়ে সবকটি আশ্চর্যজনক স্থান ঘুরতে পারা না গেলেও প্রতিবেলায় সেখানকার খাদ্যাভ্যাসের সাথে মিল রেখে পর্যটক এর সেখানকার প্রচলিত খাবার খেতে হয়। এতে করে যতদিন সে জায়গায় থাকা হয় সেখানকার খাবার এর সাথে একটি পরিচিতি হওয়ার সাথে সাথে খাবার গুলোর সাথে স্মৃতি তৈরি হয়। এ কারণে কোন একটি দেশের বা জাতির অথবা কোন মহাদেশের খাবার সমূহ এবং সেখানকার মানুষের খাদ্যাভ্যাস সে জায়গার অতীত, বর্তমান সম্পর্কে জানতে যে কাউকে বেশ ভূমিকা পালন করে। 

আমাদের এই দেশ বিদেশে খাদ্যাভ্যাসের লিখার সিরিজ এ আমরা বিভিন্ন দেশ মহাদেশ কিংবা জাতির খাবার সমূহ এবং তাদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে লিখে যাব এবং এগুলো সম্পর্কে যে মজার মজার তথ্য গুলো আপনি জানার জন্য আগ্রহী হতে পারেন সেগুলো আমাদের এই দেশ বিদেশে খাদ্যাভ্যাস সিরিজ থেকে আপনি খুব সহজেই পড়তে পারবেন। 

এশিয়ানদের খাদ্যাভাসের কথা বলতে গেলে অনেক কথাই বলা যায়। তার মাঝে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য যে বিষয় গুলো আছে সেগুলো নিয়ে কিছু তথ্য জানাচ্ছি।

হাত দিয়ে খাওয়া

এশিয়ানরা দিনে তিনবার খাবার খায় আর এখানে তরকারি দিয়ে ভাত খাওয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস হচ্ছে হাত দিয়ে খাওয়া। পাশ্চাত্যের দেশগুলোর মতো সাধারণত এশিয়ার সব দেশ এ চামচ বা ছুরি ব্যবহার করে খাওয়া হয় না বরং এখানে বেশিরভাগ দেশে হাত দিয়েই খাবারের কাজ সম্পন্ন করা হয়। তবে এখানে যেহেতু বেশিরভাগ মানুষ ডানহাতি সেহেতু ডানহাত দিয়ে খাবার খাওয়া হয় এবং এক্ষেত্রে দুই হাত দিয়ে খাওয়ার কাজ করা হয় না। 

চপস্টিক ও চামচ

আপনি যদি খাওয়ার সময় আপনার আঙ্গুল পরিষ্কার রাখতে চান এবং সোজা কথায় হাত দিয়ে খেতে না চান তবে এ তথ্যটি আপনার জন্য বেশ উপকারী হতে পারে যদি আপনি এশিয়ায় ঘুরতে আসেন। এশিয়ান দেশগুলোর সবখানেই হাত দিয়ে খাওয়া হয়না অনেক জায়গায় চপস্টিক এবং চামচ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সেসব দেশগুলোতে আপনি হাত দিয়ে খাওয়ার পরিবর্তে খুব সহজেই এগুলো ব্যবহার করে খাবার খেতে পারবেন। তবে আপনার যদি হাত দিয়ে ক্ষেত্রে কোন ধরনের সমস্যা না থাকে তাহলে এশিয়ান খাদ্যাভ্যাস হতে পারে আপনার জন্য খুবই পছন্দের এবং চমৎকার একটি খাদ্যাভ্যাস।

শুধু ভাত খাওয়া 

এশিয়ানদের একটি অদ্ভুত খাদ্যাভ্যাস হচ্ছে তারা দিনে তিনবেলা খাবার এই ভাত খেয়ে থাকে। অন্যান্য মহাদেশ বা দেশের মানুষের কাছের এই বিষয়টি অদ্ভুত লাগলেও তাদের কাছে সকালে দুপুরে এবং রাতে ভাত খাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক একটি ব্যপার। এবং অনেকের কাছে হয়তো মনে হতে পারে তিনবেলা এভাবে ভাত খেলে চরম পরিমাণের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকতে হতে পারে কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে এশিয়ান তিনবেলা ভাত খেয়েও সুস্থ ও চিকন হয়ে থাকে।

গরম চা

এশিয়ানদের আরেকটি খাদ্যাভ্যাস হচ্ছে গরম চা খাওয়া এবং এ কাজটি তারা দিনে বহুবার করে থাকে। সকালে দুপুরে রাতে খাওয়ার আগে পরে কিংবা কাজের ফাঁকে সময় পেলেই এশিয়ানরা চা খেয়ে থাকে।

ঝাল

আপনি যদি এশিয়াতে একজন পর্যটক হিসেবে যান এবং আপনি অতিরিক্ত ঝাল খেতে পারদর্শী না হন তবে খাওয়ার সময় সবচেয়ে কম ঝাল এর খাবারটি খেতে বসলেও আপনি ঝালের চোটে ঘামতে শুরু করবেন। এশিয়ান রাত খাবার ঝাল খেতে এত বেশি পছন্দ করে যে তাদের সবচেয়ে কম ঝালের খাবার টিও অনন্য মহাদেশে মানুষের কাছে প্রচুর ঝাল লাগতে পারে।

ভাগ করে খাওয়া

এশিয়ান দের খাদ্যাভ্যাসের খুব সচরাচর একটি বিষয় হচ্ছে একজনের সাথে অন্যজনের খাবার ভাগ করে খাওয়া। এশিয়ায় খুব কম ক্ষেত্রেই দেখা যায় একজন মানুষ কোন খাবার কিনে তার সাথের মানুষকে তার কোন ভাগ না দিয়ে পুরোটাই একাই খেয়ে ফেলছে। বরং একজন খাবার খেলে সেটি তিনি অপর জনের সাথে ভাগাভাগি করে খান। এবং খাবার খেতে খেতে তাদের গল্প করার যে অভ্যাস সেটি খুবই চমৎকার একটি খাদ্যাভ্যাস হিসেবে ধরা যায়। 

এশিয়ানদের এই খাদ্যাভ্যাস গুলো মনে রাখলে হয়তোবা আপনি যদি কখনো এশিয়ার কোন দেশের ঘুরতে যান তবে হয়তো কখনও এই তথ্যগুলো সাহায্য করতে পারে।

বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ফাস্টফুডের সাথে একটি সাইট আইটেম হিসেবে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খাবারটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। শুধুমাত্র তাই নয় এই জনপ্রিয় ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তৈরির প্রক্রিয়া ও তুলনামূলক সহজ। কিন্তু ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এর মাঝে বিভিন্ন ধরনের প্রকারভেদ রয়েছে এবং সেই অনুযায়ী প্রস্তুত প্রণালী বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।

এর মাঝে কোন কোন প্রণালী তে যেমন আলু দুইবার আলাদা আলাদা ভাজতে হয়। আবার কোনো কোনো প্রণালীতে আলুকে ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে নিতে হয়। কোনো কোনো প্রণালীতে আবার আলুকে ভাজার পূর্বে সিদ্ধ করে নিতে হয়। তাহলে আসুন দেখে নেওয়া যাক কোন ধরনের ফ্রেঞ্চ ফ্রাই পাওয়ার জন্য কোন ধরনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয় -

প্রথমত আপনি যদি রেস্টুরেন্টে প্রাপ্য মচমচে ধরনের ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তৈরি করতে চান তাহলে আপনাকে আলু নির্বাচন করতে হবে বড় আকৃতির এবং সেগুলোর খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। তারপর আলুগুলোকে ঠান্ডা পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে যাতে আলুর বাইরে বিদ্যমান ময়লা পরিষ্কার হয়ে যায়। 

তারপর আপনাকে সে আলু গুলোকে প্রথমে উচ্চ তাপমাত্রার তেলে ভেজে নিতে হবে খুবই অল্প সময় পর্যন্ত। আলু কিছুটা বাদামী বাদামী রং ধারণ করলে সাথে সাথে উঠিয়ে ঠান্ডা করে নিতে হবে। আলু গুলোকে কিছুক্ষণ তেলের বাইরে রেখে ঠাণ্ডা হয়ে গেলে তারপর আবার মাঝারি তাপমাত্রায় আলু গুলোকে তেলের মাঝে ভেজে নিতে হবে। লক্ষনীয় বিষয় হলো, প্রথমবার উচ্চ তাপমাত্রায় অল্পসময় ভাজার ফলে আলুর বাইরে মচমচে ভাবটা চলে আসে এবং দ্বিতীয়বার মাঝারি তাপমাত্রায় বেশিক্ষণ ভাজার ফলে আলুর ভেতরের অংশটি রান্না হয়ে যায়। তাই দুইবার বেছে নেওয়ার এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে আপনি সুসিদ্ধ এবং মচমচে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তৈরি করতে পারবেন । এ ধরনের মচমচে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই আপনি আপনার পছন্দের কোন সসের সাথে মিশিয়ে উপভোগ করতে পারবেন।

এখন আসা যাক দ্বিতীয় প্রক্রিয়াটিতে 

প্রথম প্রক্রিয়াটিতে আপনি আলুর ফ্লেভার বৃদ্ধি করার জন্য লবণ বা বিভিন্ন মসলা বা আপনার পছন্দের সস ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু দ্বিতীয় প্রক্রিয়াটিতে আলু সিদ্ধ করে নেয়ার মাঝে এবং সিদ্ধ করার সময় পানিতে লবন দেয়ার মাধ্যমে আলুকে শুরু থেকেই একটি ফ্লেভার দিয়ে গড়ে তুলতে পারবেন। এক্ষেত্রে পূর্বের মতো লম্বা আলু নির্বাচন করতে হবে এবং খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। তারপর আলুগুলো কেটে নিয়ে ঠান্ডা পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে।

শুরুতেই পানিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ লবণ দিয়ে দিতে হবে। তাহলে একদিকে যেমন আলু সিদ্ধ হতে থাকবে অন্যদিকে আলুর মাঝে পানি প্রবেশ করবে এবং আলু সিদ্ধের গতি বৃদ্ধি করে দিবে। তারপর আলু যখন মোটামুটি সিদ্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় চলে আসবে তখন আপনি আলু গুলোকে নামিয়ে ফেলবেন এবং কিছুক্ষণ ঠান্ডা করে তারপর গরম তেলে ভেজে নিবেন। সঠিকভাবে ভাজা হয়ে গেলে আলু চুলা থেকে নামিয়ে তাতে লবণ বা পছন্দের কোনো মসলা ছড়িয়ে দিবেন এবং এই প্রক্রিয়াতে তুলনামূলক কম মচমচে আলু ভাজা তৈরি হলেও দেখা যাবে যে ফ্লেভারের দিক থেকে এই ফ্রেঞ্চ ফ্রাই প্রথম প্রক্রিয়াটির মতই অনেক বেশি সুস্বাদু। 

রেস্টুরেন্টের মতো ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তৈরির এই দুইটি প্রক্রিয়ার মাঝে এই ছিল পার্থক্য।

দিন দিন ওভেন এর চাহিদা এবং জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে আমরা অনেকেই বেশ কিছু সাধারন রান্না এখন ওভেন এ করার চেষ্টা করে থাকি। সেসব রান্নাটি একটি হচ্ছে চিকেন বা মুরগির মাংস ওভেনে রান্না করা। কিন্তু সাধারণত চুলায় রান্নার পরিবর্তে ওভেনে মুরগির মাংস রান্না করার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে লক্ষ্য রাখা উচিত।

এখানে মূল বিষয় হলো মুরগির দেহের বিভিন্ন অংশের মাংস রান্না হতে বিভিন্ন রকম তাপমাত্রা এবং বিভিন্ন রকম সময় লেগে থাকে। আমরা যখন চুলায় সাধারণত কোন পাত্রে মুরগির মাংস রান্না করে থাকি তখন তা অত্যন্ত দীর্ঘ সময় যাবত চুলাতে থাকে। এবং আমরা সময় সময়ে ইচ্ছা করলেই একটু মাংস তুলে নিয়ে দেখে নিতে পারি মাংস সঠিকভাবে রান্না হয়েছে কিনা। কিন্তু ওভেনে মাংস রান্নার ক্ষেত্রে এ ব্যাপারটি ততটা সহজ নয়। তাই ওভেনের তাপমাত্রা এবং সময় এর ব্যাপারটি এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

আরও সহজভাবে বলতে গেলে মুরগির মাংসের কিছু অংশ থাকে লাইট মীট (light meat) বা হোয়াইট মীট (white meat), এবং কিছু মাংস থাকে ডার্ক মীট (dark meat). এই হোয়াইট মীট অংশ রান্না হতে তুলনামূলক কম সময় লাগে এবং ডার্ক মীটের অংশগুলো রান্না হতে তুলনামূলক বেশি সময় লাগে মাংসের গঠনগত পার্থক্যের জন্য। 

এ ব্যাপারটি সমাধান করার জন্য দুইটি কাজ করা যেতে পারে আপনি যখন ওভেনে আস্ত মুরগী রান্না করবেন তখন অবশ্যই মুরগির মাংস ডিম রান্না হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সময় অনুযায়ী বেকিং করে থাকবেন। কিন্তু যদি আপনি ডার্ক মীট এবং হোয়াইট মীট আলাদা ভাবে রান্না করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনি সহজেই মানুষের ধরন অনুযায়ী ওভেন এ তাপমাত্রা এবং সময় পরিবর্তন করে ফেলতে পারবেন।

এক্ষেত্রে একটি নিয়ম অনুসরণ করতে হয় যা হচ্ছে বেকিং এর মাধ্যমে মুরগির মাংস প্রস্তুত করতে হলে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে মুরগির মাংসের অভ্যন্তরে তাপমাত্রা যেন ১৬৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট এর বেশি হয়ে থাকে। কারণ হচ্ছে ১৬৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট মুরগির মাংস রান্নার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ তাপমাত্রা এবং কোনভাবেই ১৬৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের কম তাপমাত্রায় প্রস্তুতকৃত মুরগির মাংস আমাদের খাওয়ার জন্য উপযুক্ত এবং নিরাপদ নয়। 

তাই আপনি আস্ত মুরগির মাংস একসাথে ওভেনে রান্না করুন, আর আলাদা আলাদা ভাবে রান্না করুন না কেন, অবশ্যই নিশ্চিত রাখতে হবে মাংসের অভ্যন্তরে তাপমাত্রা যেন ১৬৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হয়ে থাকে।

বেকিং এর মাধ্যমে তৈরি করা খাবার গুলোর মাঝে কেক হচ্ছে একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় খাবার এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান বিশেষ করে জন্মদিন এর ক্ষেত্রে কেক একটি অপরিহার্য উপাদান হিসেবে কাজ করে। তাহলে আসুন দেখে নেওয়া যাক এই কেক তৈরীর ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখলে সহজেই আপনি আপনার কেকের মান বৃদ্ধি করতে পারবেন এবং একটি সুন্দর টেক্সচার বজায় রাখতে পারবেন।

ময়দা

ময়দার কেক তৈরি করার সময় প্রথমেই যে উপাদানটি মৌলিক ভূমিকা পালন করে তা হচ্ছে ভালো মানের ময়দা। ময়দা নির্বাচনের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে আপনার বাছাই করা ময়দা যাতে ভালো মানের হয় এবং বেশি পুরাতন না হয়। কারণ বেশি পুরাতন হলে অনেক সময় দেখা যায় ময়দার জায়গায় জায়গায় জমাট বেঁধে যায় এবং সেগুলো টেক্সচারে ধরা পরে এবং কেকের টেক্সচারকে অনাকাঙ্ক্ষিত করে ফেলে। তাই অবশ্যই ভালো মানের পরিষ্কার ময়দা ব্যবহার করতে হবে এবং যদি ময়দা কোন কারণে পুরাতন হয়ে থাকে তাহলে ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই তা ছেঁকে নিতে হবে।

ডিম 

ডিম ব্যবহার করার ব্যাপারে কখনো কখনো সম্পূর্ণ ডিম ব্যবহার করতে হয় এবং কখনও কখনও ডিমের শুধু কুসুম অথবা শুধু সাদা অংশে ব্যবহার করতে হয়। এক্ষেত্রে আপনি যে ধরনের ব্যবহার করছেন সেই অনুযায়ী ডিম নির্বাচন করতে হবে। সাধারণত আপনার কেকে যদি মাখনের পরিমাণ বেশি থাকে তাহলে ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করা শ্রেয়। কিন্তু আপনার কেকের মাঝে যদি ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকে বা মাখনের পরিমাণ কম থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ডিমের কুসুম ব্যবহার করতে হবে। কারণ ডিমের কুসুম নিজেও একটি ফ্যাটের উৎস হিসেবে কাজ করে এবং সবমিলিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

চিনি 

বাজারের বিদ্যমান চিনি গুলোর মাঝে দুই ধরনের চিনি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এক হচ্ছে ব্রাউন সুগার (Brown Sugar) এবং অপরটি হোয়াইট সুগার (White Sugar)। কেক তৈরির ক্ষেত্রে সাধারণত হোয়াইট সুগার ব্যবহার করা হয়ে থাকে কারণ হচ্ছে হোয়াইট সুগার এর তুলনায় ব্রাউন সুগার অনেক বেশি ঘন প্রকৃতির হয়। সেজন্য কেকের মোলায়েম টেক্সচার বজায় রাখার জন্য ব্রাউন সুগার ব্যবহার করা হয় না। তার পরিবর্তে ভালোমানের  হোয়াইট সুগার ব্যবহার করতে হয়। আরও ভালো ফলাফল পেতে কেক তৈরীর সময় সুন্দর টেক্সচার বজায় রাখতে আপনি হোয়াইট সুগারের প্রক্রিয়াজাতকৃত ধরন ব্যবহার করতে পারেন যা সাধারণতঃ বেকিং সুগার বা আইসিং সুগার নামে পরিচিত। এখানে খেয়াল রাখতে হবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে আইসিং সুগার মিহি চিনির দানার পাশাপাশি এক ধরনের স্টার্চ  বিদ্যমান থাকতে পারে তাই কেনার পূর্বে অবশ্যই সেটা লক্ষ্য রাখতে হবে।

মাখন বা তেল 

কেক তৈরির ক্ষেত্রে ফ্যাট এর উৎস হিসেবে মাখন বা তেল ব্যবহার করতে হয়। এদের মাঝে মৌলিক পার্থক্য হচ্ছে মাখনে ফ্যাট এর পাশাপাশি বিভিন্ন মিলক সলিডস্‌ বিদ্যমান থাকে যেগুলো বেশি তাপমাত্রায় পুড়ে যেতে পারে এবং পুড়ে বাদামি বর্ণ ধারণ করতে পারে। তাই আপনার কেকের আকৃতি অনুযায়ী এবং কেমন তাপমাত্রায় কেকটি তৈরি করবেন সেই অনুযায়ী আপনাকে মাখন বা তেলের মাঝে একটি বাছাই করতে হবে 

ওভেন সেটিংস 

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কেক তৈরি করার জন্য ইলেকট্রিক ওভেন বা গ্যাস ওভেন ব্যবহার করা হয়। বাজারে বিদ্যমান যে ওভেনগুলো আছে সেগুলোর অধিকাংশের উপরিতলে একটি গ্রিল সেটিংস বিদ্যমান থাকে। সাধারণত কেক ব্যবহার করার সময় এই গ্রিল সেটিংস টা অফ করে নিতে হয় কারণ হচ্ছে গ্রিল এর ব্যবহার করলে কেকের উপরিভাগে একটি বাদামি আস্তরণ পড়তে পারে।

এই কৌশলগুলো অনুসরণ করলে সহজেই মানসম্মত কেক তৈরি করতে পারবেন এবং কেক এর আকর্ষণীয় টেক্সচার বজায় রাখতে পারবেন।

আমরা যারা বেকিং করে থাকি অথবা বেকিং শুরু করতে যাচ্ছি তাদের অনেকেরই একটি ইচ্ছা থাকে - নিজ হাতে বিভিন্ন ধরনের কুকিজ বেক করতে পারা এবং কুকিজ মেকিং এর ক্ষেত্রে একটিবারও পারদর্শিতা লাভ করা। 

তাহলে দেখে নেওয়া যাক কুকিজ বেকিং এর ব্যাপারে কিছু টিপস যেগুলো আমাদের সবসময় মনে রাখা দরকার এবং এই টিপসগুলো অনুসরণ করলে আপনি সহজেই কুকিজ বেকিং এ পারদর্শিতা অর্জন করতে পারবেন।

কুকিজ বেকিং এর সময় চিনি নিয়ে আমরা অনেকেই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে পারি। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়টি আপনি মনে রাখতে পারেন তা হচ্ছে আপনি যদি চান আপনার কুকিজ গুলো একটু কেক টাইপের টেক্সচার পাক তাহলে আপনাকে আপনি অবশ্যই ব্রাউন সুগার ইউজ করতে হবে। আর আপনি যদি তুলনামূলক মচমচে কুকিজ বেক করতে চান তাহলে আপনি হোয়াইট সুগার ব্যবহার করতে পারবেন। এতে বিদ্যমান মোলাসেস উপাদানটির জন্য এদের দ্বারা তৈরি কুকিজ গুলো একটু সফট হয়ে থাকে এবং টেক্সচার অনুযায়ী কুকিজ গুলো একটু কেক ধরনের হয়ে থাকে বা নরম হয়ে থাকে।

ডিম 

কুকিজ তৈরীর ক্ষেত্রে ডিম একটি মৌলিক উপাদান হিসেবে কাজ করে। এখন অনেকেই চিন্তা করে থাকতে পারেন যে, কোনো কারণে যদি ডিম কম হয়ে যায় বা বেশি হয়ে যায় তাহলে কুকিজ কি পরিমাণ পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন ডিম শুধুমাত্র কুকিজ নয়, কেক বেক করার সময়ও ডিম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই কোনো কারণে যদি আপনার কুকিজ এ ডিমের পরিমাণ বেশি হয়ে যায় তাহলে অতিরিক্ত ডিমের কারণে আপনার কুকিজ গুলো অনেকটা কেকের মতো টেক্সচার পেয়ে যাবে। আর যদি কোনো কারণে ডিম কম হয়ে যায় তাহলে আপনার কুকিজগুলো একদম শুষ্ক ধরনের এবং শক্ত ধরনের হয়ে যেতে পারে।

ময়দা 

বেক করার সময় সাধারণত আমরা সচরাচর যে ময়দা ব্যবহার করে থাকি সেটা ব্যবহার করলেই হয়ে যায় যেটাকে অল পারপাস ফ্লাওয়ার নামে অভিহিত করা হয়। খেয়াল রাখতে হবে কুকিস বেক করার সময় আপনি যে রেসিপি ফলো করছেন সে অনুযায়ী যতটা সম্ভব সূক্ষ্মভাবে যাতে আপনি ময়দার পরিমাপ করে নিতে পারেন। যদি আপনার ময়দা একটু পুরনো হয়ে থাকে তাহলে ব্যবহারের পূর্বে ময়দাটা ছেঁকে নিয়ে মিহি করে নিলে সুবিধা হবে।

মাখন বা তেল 

বেকিং করার ক্ষেত্রে অনেক সময় একটি প্রধান উপাদান হিসেবে মাখন ব্যবহার করা হয়ে থাকে কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাখন এর পরিবর্তে তেল ব্যবহার করা যায়। কিন্তু কুকিজ তৈরি করার সময় ব্যাপারটি খেয়াল রাখতে হবে যে, মাখনে ফ্যাট ছাড়াও বিভিন্ন মিল্ক সলিডস বিদ্যমান থাকে যেগুলো আপনার কুকিজের টেক্সচারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। কিন্তু অন্যদিকে শুধুমাত্র তেল ব্যবহার করলে মিল্ক সলিডস গুলোর অনুপস্থিতির কারণে আপনার কুকিজের টেক্সচার অতটা ভালো হবে না।  

উপরোল্লিখিত টিপসগুলো অনুসরণ করলে আপনি সহজেই নিজ হাতে বেশ ভালো মানসম্মত এবং টেক্সচার বজায় রেখে কুকিজ বেক করতে পারবেন।

সুগার বা চিনি বিভিন্ন খাদ্য দ্রব্য তৈরি করাতে একটি মিষ্টি উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মোটামুটি ভাবে যেকোন ধরনের মিষ্টান্ন তৈরিতেই তিনি একটি অপরিহার্য উপাদান হিসেবে কাজ করে। মিষ্টান্ন ছাড়াও আরও বেশ কিছু রান্নায় বিভিন্ন কারণে চিনি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কিন্তু বাজারে সাধারণত একাধিক ধরনের চিনি পাওয়া যায়। যার মাঝে ব্রাউন সুগার এবং হোয়াইট সুগার সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। বিভিন্ন রান্নার জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক হোয়াইট সুগার এবং ব্রাউন সুগার এর মাঝে পার্থক্য গুলো যাতে আমরা সহজেই নির্ধারণ করতে পারি কোন চিনি কোন রান্নার জন্য উপযুক্ত -

অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিনি তৈরি করা হয় আখের নির্যাস থেকে। আখের নির্যাসকে বিভিন্নভাবে প্রক্রিয়াজাত করে সর্বশেষে ক্রিষ্টাল আকৃতির চিনি পাওয়া যায়। হোয়াইট সুগার, ব্রাউন সুগার মূলত তিনি প্রক্রিয়াজাতকরণের বিভিন্ন ধাপের উপর নির্ভরশীল। সহজভাবে বলতে গেলে হোয়াইট সুগার হচ্ছে চিনি উৎপাদন প্রক্রিয়ার সর্বশেষ ধাপের পণ্য অর্থাৎ আখের নির্যাসকে প্রক্রিয়াজাত করে বিভিন্ন রিফাইনিং স্টেজ অতিক্রম করার পর সবশেষে যে পরিশোধিত পণ্য পাওয়া যায় তা হচ্ছে হোয়াইট সুগার। কিন্তু অন্যদিকে ব্রাউন সুগার হচ্ছে চিনি উৎপাদনের মধ্যবর্তী ধাপের একটি পণ্য। 

রাসায়নিক ভাবে বলতে গেলে আখের নির্যাস থেকে যখন চিনি উৎপাদন করা হয় তখন তার সাথে মোলাসেস নামক একটি উপাদান থাকে। মোলাসেস উপাদানটির জন্য চিনির রং বাদামী হয়ে থাকে এবং চিনির স্বাদ কিছুটা তীব্র হয়ে থাকে। কিন্তু চিনি থেকে যদি মোলাসেস উপাদানটি সরিয়ে দেয়া হয় তাহলেই সবশেষে হোয়াইট সুগার পাওয়া যায়।

তাহলে এক কথায় বলতে পারি ব্রাউন সুগার এবং হোয়াইট সুগার এর মৌলিক উপাদান সুক্রোজ হয়ে থাকলেও ব্রাউন সুগার মলাসেস নামক একটি উপাদান বিদ্যমান থাকে এবং হোয়াইট সুগারে কোন ধরনের মলাসেস থাকে না। এই হচ্ছে ব্রাউন সুগার এবং হোয়াইট সুগার এর মধ্যে পার্থক্য। 

এখন ব্যবহারের দিক থেকে বিবেচনা করলে ব্রাউন সুগারে যেহেতু মোলাসেস থাকে তাই ব্রাউন সুগার এর স্বাদের দিক থেকে সাধারণ চিনির পাশাপাশি মোলাসেস এর একটি তীব্র গন্ধ বিদ্যমান থাকে এবং মোলাসেস সাধারণত বেশ ঘন প্রকৃতি হয়ে থাকে। এ জন্য সাধারণত বিভিন্ন বিস্কিট বা কুকিস তৈরি করার জন্য এই ব্রাউন সুগার বেশি ব্যবহার করা হয়। কারণ ব্রাউন সুগার এ মোলাসেস এর কারণে কুকিজ গুলো একটি সুন্দর টেক্সচার পেয়ে থাকে।

অন্যদিকে সাধারণ রান্নার ক্ষেত্রে আমরা হোয়াইট সুগার ব্যবহার করে থাকি। যেখানে মোলাসেস এর ফ্লেভার এর প্রয়োজন পড়ে না। মোলাসেস এর উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতির জন্য হোয়াইট সুগার এবং ব্রাউন সুগার এর কিছু পুষ্টিগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। 

এই ছিল ব্রাউন সুগার এবং হোয়াইট সুগারের মাঝে মৌলিক পার্থক্য গুলো এবং এদের ব্যবহারগত দিকে থেকে তারতম্য।

আমরা যারা বিভিন্ন খাবার বেক করে থাকি কিংবা বেকিং শুরু করার চেষ্টা করছি তাদের অনেকের মাঝেই একটা প্রশ্ন জাগতে পারে। সেটি হলো বেকিং এর ক্ষেত্রে বাজারে বিভিন্ন ধরনের ওভেন বিদ্যমান। কিন্তু, এদের মাঝে কোনগুলো বেকিং এর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত?

আসুন দেখে নেওয়া যাক বাজারে বিদ্যমান ওভেন গুলোর মাঝে মূল পার্থক্য গুলো কি কি এবং কোন ওভেন বেকিং এর জন্য সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত।

বাজারের বিদ্যমান ওভেন গুলোর মাঝে প্রধানত তিনটি প্রকারভেদ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। সেগুলো হচ্ছে - মাইক্রোওয়েভ, ইলেকট্রিক এবং গ্যাস ওভেন। সাধারণত ইলেকট্রিক ওভেন এবং গ্যাস ওভেন বেকিং এর জন্য বেশি উপযুক্ত এবং মাইক্রোওয়েভ ওভেন বেকিং এর পরিবর্তে খাবার গরম করার ক্ষেত্রে বা রান্না করার ক্ষেত্রে বেশি উপযুক্ত। এখন দেখে নেয়া যাক এদের মাঝে মৌলিক পার্থক্য গুলো কি কি এবং কেন ইলেকট্রিক গ্যাস ওভেন বেকিং এর জন্য ভালো।

মাইক্রোওয়েভ ওভেন ব্যবহার এর ক্ষেত্রে এর মাঝে মাইক্রোওয়েভ তরঙ্গ সৃষ্টি হয়ে থাকে এবং এটি খাবারকে ভেদ করে বিচরণ করতে থাকে। এর ফলে খাবারের অণুগুলোর মাঝে এক ধরনের কম্পন বা অনুরণন সৃষ্টি হয় এবং তার ফলে খাবারের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এর জন্য মাইক্রোওয়েভ ওভেন দিয়ে খাবার গরম করা বা রান্না করা অত্যন্ত সহজ এবং কম সময়ে সাধ্য হয়। মাইক্রোওভেন সাধারণত বিদ্যুৎ দ্বারা পরিচালিত হয় এবং এতে সময় নির্ধারণ করে দিয়ে এই ওভেন ব্যবহার করা যায়। 

অন্যদিকে ইলেকট্রিক ওভেন বা গ্যাস ওভেনে যা হয় তা হচ্ছে এই ওভেনগুলোতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একধরণের গ্রিল সিস্টেম থাকে যা কাঙ্খিত তাপমাত্রা অনুযায়ী ওভেনের ভেতরের অংশকে এবং সে অংশে বিদ্যমান অভ্যন্তরীণ  বাতাসকে গরম করে। যার ফলে পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির মাধ্যমে সেখানে থাকা খাবার ধীরে ধীরে গরম হয়ে যায়। এতে করে সেখানে কাঙ্ক্ষিত তাপমাত্রা পর্যন্ত পৌঁছায় এবং এ কারণে গ্যাস ওভেন বা ইলেকট্রিক ওভেনে খুব সহজেই তাপমাত্রা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং সময় নির্ধারণ করে দেওয়া যায়। আবার কখনো কখনো কনভেকশন প্রযুক্তির মাধ্যমে তাপমাত্রার সঞ্চালনের জন্য এক ধরনের অভ্যন্তরীণ ফ্যান ব্যবহার করা যায় যা খাবারটি কে পরিমিতভাবে  তাপমাত্রা সরবরাহ করে এবং তাপ সঞ্চালন করে খাবার তৈরি করতে সাহায্য করে। তাই সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে যে, ইলেকট্রিক গ্যাস ওভেনে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে এবং সময় নির্ধারণ করা যাচ্ছে খুব সহজেই। 

বেকিং এর ক্ষেত্রে ব্যাপারটা হচ্ছে, খাবার বেক করার ক্ষেত্রে ওভেন এর তাপমাত্রা এবং সময় নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

যার ফলে খাবার বেক করার ক্ষেত্রে ইলেক্ট্রিক বা গ্যাদ ওভেনগুলোই বেশি উপযুক্ত। অন্যদিকে মাইক্রোওয়েভের প্রযুক্তি ব্যবহার করে অল্প সময়ে খাবার গরম করার ক্ষেত্রে মাইক্রোওয়েভ ওভেনের ব্যবহারই শ্রেয়।