বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ফাস্টফুডের সাথে একটি সাইট আইটেম হিসেবে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খাবারটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। শুধুমাত্র তাই নয় এই জনপ্রিয় ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তৈরির প্রক্রিয়া ও তুলনামূলক সহজ। কিন্তু ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এর মাঝে বিভিন্ন ধরনের প্রকারভেদ রয়েছে এবং সেই অনুযায়ী প্রস্তুত প্রণালী বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।
এর মাঝে কোন কোন প্রণালী তে যেমন আলু দুইবার আলাদা আলাদা ভাজতে হয়। আবার কোনো কোনো প্রণালীতে আলুকে ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে নিতে হয়। কোনো কোনো প্রণালীতে আবার আলুকে ভাজার পূর্বে সিদ্ধ করে নিতে হয়। তাহলে আসুন দেখে নেওয়া যাক কোন ধরনের ফ্রেঞ্চ ফ্রাই পাওয়ার জন্য কোন ধরনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয় -
প্রথমত আপনি যদি রেস্টুরেন্টে প্রাপ্য মচমচে ধরনের ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তৈরি করতে চান তাহলে আপনাকে আলু নির্বাচন করতে হবে বড় আকৃতির এবং সেগুলোর খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। তারপর আলুগুলোকে ঠান্ডা পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে যাতে আলুর বাইরে বিদ্যমান ময়লা পরিষ্কার হয়ে যায়।
তারপর আপনাকে সে আলু গুলোকে প্রথমে উচ্চ তাপমাত্রার তেলে ভেজে নিতে হবে খুবই অল্প সময় পর্যন্ত। আলু কিছুটা বাদামী বাদামী রং ধারণ করলে সাথে সাথে উঠিয়ে ঠান্ডা করে নিতে হবে। আলু গুলোকে কিছুক্ষণ তেলের বাইরে রেখে ঠাণ্ডা হয়ে গেলে তারপর আবার মাঝারি তাপমাত্রায় আলু গুলোকে তেলের মাঝে ভেজে নিতে হবে। লক্ষনীয় বিষয় হলো, প্রথমবার উচ্চ তাপমাত্রায় অল্পসময় ভাজার ফলে আলুর বাইরে মচমচে ভাবটা চলে আসে এবং দ্বিতীয়বার মাঝারি তাপমাত্রায় বেশিক্ষণ ভাজার ফলে আলুর ভেতরের অংশটি রান্না হয়ে যায়। তাই দুইবার বেছে নেওয়ার এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে আপনি সুসিদ্ধ এবং মচমচে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তৈরি করতে পারবেন । এ ধরনের মচমচে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই আপনি আপনার পছন্দের কোন সসের সাথে মিশিয়ে উপভোগ করতে পারবেন।
এখন আসা যাক দ্বিতীয় প্রক্রিয়াটিতে
প্রথম প্রক্রিয়াটিতে আপনি আলুর ফ্লেভার বৃদ্ধি করার জন্য লবণ বা বিভিন্ন মসলা বা আপনার পছন্দের সস ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু দ্বিতীয় প্রক্রিয়াটিতে আলু সিদ্ধ করে নেয়ার মাঝে এবং সিদ্ধ করার সময় পানিতে লবন দেয়ার মাধ্যমে আলুকে শুরু থেকেই একটি ফ্লেভার দিয়ে গড়ে তুলতে পারবেন। এক্ষেত্রে পূর্বের মতো লম্বা আলু নির্বাচন করতে হবে এবং খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। তারপর আলুগুলো কেটে নিয়ে ঠান্ডা পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে।
শুরুতেই পানিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ লবণ দিয়ে দিতে হবে। তাহলে একদিকে যেমন আলু সিদ্ধ হতে থাকবে অন্যদিকে আলুর মাঝে পানি প্রবেশ করবে এবং আলু সিদ্ধের গতি বৃদ্ধি করে দিবে। তারপর আলু যখন মোটামুটি সিদ্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় চলে আসবে তখন আপনি আলু গুলোকে নামিয়ে ফেলবেন এবং কিছুক্ষণ ঠান্ডা করে তারপর গরম তেলে ভেজে নিবেন। সঠিকভাবে ভাজা হয়ে গেলে আলু চুলা থেকে নামিয়ে তাতে লবণ বা পছন্দের কোনো মসলা ছড়িয়ে দিবেন এবং এই প্রক্রিয়াতে তুলনামূলক কম মচমচে আলু ভাজা তৈরি হলেও দেখা যাবে যে ফ্লেভারের দিক থেকে এই ফ্রেঞ্চ ফ্রাই প্রথম প্রক্রিয়াটির মতই অনেক বেশি সুস্বাদু।
রেস্টুরেন্টের মতো ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তৈরির এই দুইটি প্রক্রিয়ার মাঝে এই ছিল পার্থক্য।
সুগার বা চিনি বিভিন্ন খাদ্য দ্রব্য তৈরি করাতে একটি মিষ্টি উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মোটামুটি ভাবে যেকোন ধরনের মিষ্টান্ন তৈরিতেই তিনি একটি অপরিহার্য উপাদান হিসেবে কাজ করে। মিষ্টান্ন ছাড়াও আরও বেশ কিছু রান্নায় বিভিন্ন কারণে চিনি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কিন্তু বাজারে সাধারণত একাধিক ধরনের চিনি পাওয়া যায়। যার মাঝে ব্রাউন সুগার এবং হোয়াইট সুগার সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। বিভিন্ন রান্নার জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক হোয়াইট সুগার এবং ব্রাউন সুগার এর মাঝে পার্থক্য গুলো যাতে আমরা সহজেই নির্ধারণ করতে পারি কোন চিনি কোন রান্নার জন্য উপযুক্ত -
অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিনি তৈরি করা হয় আখের নির্যাস থেকে। আখের নির্যাসকে বিভিন্নভাবে প্রক্রিয়াজাত করে সর্বশেষে ক্রিষ্টাল আকৃতির চিনি পাওয়া যায়। হোয়াইট সুগার, ব্রাউন সুগার মূলত তিনি প্রক্রিয়াজাতকরণের বিভিন্ন ধাপের উপর নির্ভরশীল। সহজভাবে বলতে গেলে হোয়াইট সুগার হচ্ছে চিনি উৎপাদন প্রক্রিয়ার সর্বশেষ ধাপের পণ্য অর্থাৎ আখের নির্যাসকে প্রক্রিয়াজাত করে বিভিন্ন রিফাইনিং স্টেজ অতিক্রম করার পর সবশেষে যে পরিশোধিত পণ্য পাওয়া যায় তা হচ্ছে হোয়াইট সুগার। কিন্তু অন্যদিকে ব্রাউন সুগার হচ্ছে চিনি উৎপাদনের মধ্যবর্তী ধাপের একটি পণ্য।
রাসায়নিক ভাবে বলতে গেলে আখের নির্যাস থেকে যখন চিনি উৎপাদন করা হয় তখন তার সাথে মোলাসেস নামক একটি উপাদান থাকে। মোলাসেস উপাদানটির জন্য চিনির রং বাদামী হয়ে থাকে এবং চিনির স্বাদ কিছুটা তীব্র হয়ে থাকে। কিন্তু চিনি থেকে যদি মোলাসেস উপাদানটি সরিয়ে দেয়া হয় তাহলেই সবশেষে হোয়াইট সুগার পাওয়া যায়।
তাহলে এক কথায় বলতে পারি ব্রাউন সুগার এবং হোয়াইট সুগার এর মৌলিক উপাদান সুক্রোজ হয়ে থাকলেও ব্রাউন সুগার মলাসেস নামক একটি উপাদান বিদ্যমান থাকে এবং হোয়াইট সুগারে কোন ধরনের মলাসেস থাকে না। এই হচ্ছে ব্রাউন সুগার এবং হোয়াইট সুগার এর মধ্যে পার্থক্য।
এখন ব্যবহারের দিক থেকে বিবেচনা করলে ব্রাউন সুগারে যেহেতু মোলাসেস থাকে তাই ব্রাউন সুগার এর স্বাদের দিক থেকে সাধারণ চিনির পাশাপাশি মোলাসেস এর একটি তীব্র গন্ধ বিদ্যমান থাকে এবং মোলাসেস সাধারণত বেশ ঘন প্রকৃতি হয়ে থাকে। এ জন্য সাধারণত বিভিন্ন বিস্কিট বা কুকিস তৈরি করার জন্য এই ব্রাউন সুগার বেশি ব্যবহার করা হয়। কারণ ব্রাউন সুগার এ মোলাসেস এর কারণে কুকিজ গুলো একটি সুন্দর টেক্সচার পেয়ে থাকে।
অন্যদিকে সাধারণ রান্নার ক্ষেত্রে আমরা হোয়াইট সুগার ব্যবহার করে থাকি। যেখানে মোলাসেস এর ফ্লেভার এর প্রয়োজন পড়ে না। মোলাসেস এর উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতির জন্য হোয়াইট সুগার এবং ব্রাউন সুগার এর কিছু পুষ্টিগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়ে থাকে।
এই ছিল ব্রাউন সুগার এবং হোয়াইট সুগারের মাঝে মৌলিক পার্থক্য গুলো এবং এদের ব্যবহারগত দিকে থেকে তারতম্য।
প্রতিদিনের রান্নার কাজে বিশেষ করে ভাজাপোড়ার কাজে এবং মিষ্টান্ন তৈরীর ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রে আমরা ঘি বা মাখন ব্যবহার করে থাকি। বিশেষ করে এশিয়ার অন্তর্ভুক্ত দেশ গুলোতে ঘি’র ব্যবহার বেশ প্রচলিত এবং ইউরোপীয় এবং আমেরিকার দেশগুলোতেও মাখন বেশি প্রচলিত।
এখন প্রশ্ন জাগতে পারে যে, ঘি এবং মাখন একই উৎস থেকে তৈরি করা হলেও বিভিন্ন রান্নার ক্ষেত্রে এদের ব্যবহার বিভিন্ন রকম কেন হয়ে থাকে। যদি আমরা ঘি আর মাখন এর পার্থক্য বুঝে ফেলতে পারি তাহলে সহজেই নির্ধারণ করতে পারব যে কোন রান্নার জন্য মাখন উপযুক্ত এবং কোন রান্নার জন্য ঘি উপযুক্ত।
ঘি এবং মাখন উভয়ই হচ্ছে দুধজাত পণ্য এবং সাধারণত গরুর দুধ থেকে ঘি এবং মাখন দুটি প্রস্তুত করা হয়। সহজভাবে এদের মাঝে পার্থক্য বলতে গেলে যেটি রয়েছে, তা হচ্ছে দুধকে প্রক্রিয়াজাত করে মাখন তৈরি করা হয়; এবং মাখনকে প্রক্রিয়াজাত করলে ঘি পাওয়া যায়।
রাসায়নিকভাবে বিবেচনা করা হলে, মাখনের মাঝে দুগ্ধজাত ফ্যাট ছাড়াও অন্যান্য উপাদান থাকে যার মাঝে ল্যাকটোজ অন্যতম এবং এটি থেকে যখন ঘি তৈরি করা হয়, তখন মাখনের ফ্যাট-জাতীয় অংশ এবং দুগ্ধজাত মিল্ক সলিড্স অংশ -এই দুই অংশ আলাদা আলাদা করে ফেলা হয় এবং সেই মিল্ক সলিড্স উপাদানগুলোকে অপসারণ করলেই যে পরিশোধিত ফ্যাট পাওয়া যায় তা হচ্ছে ঘি। এটি হচ্ছে এদের রাসায়নিক ও পদার্থগত পার্থক্য।
ঘিকে সাধারণত ক্লারিফাইড বাটার নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে।
এখন আসা যাক রান্নার ক্ষেত্রে। কখন কোনটি ব্যবহার করা হয় তা আমরা জানি। মাখনের স্ফুটনাংক বা স্মোকিং পয়েন্ট ল্যাকটোজ এর চেয়ে অনেক বেশী হয়ে থাকে। সেজন্য আপনি যদি মাখন ব্যবহার করে উচ্চ তাপমাত্রার কোন রান্না করতে যান তবে দেখা যাবে যে মাখনের অংশ ঠিকঠাক থাকলেও ল্যাকটোজ এর অংশ সহজে পড়ে যাচ্ছে বা বাদামি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মাখন এর পরিবর্তে ঘি ব্যবহার করলে যা হয় তা হচ্ছে যেহেতু ল্যাকটোজ জাতীয় অংশ ইতিমধ্যে অপসারণ করা হয়ে গেছে তাই সব মিলিয়ে ঘি’র স্মোকিং পয়েন্ট বেড়ে যায়। ফলে উচ্চ তাপমাত্রার রান্না করার ক্ষেত্রে মাখন এর পরিবর্তে ঘি বেশি উপযুক্ত হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। অন্যদিকে যেসব খাবার প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে দুগ্ধজাত ল্যাকটোজ প্রয়োজন হয়ে থাকে ফ্লেভারের কারণে সেসব খাবার এর ক্ষেত্রে ঘি’র পরিবর্তে মাখন ব্যবহার করাই শ্রেয়।
কারও কারও ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেকের ল্যাকটোজেন টলারেন্স নামক একটি কন্ডিশন থাকে। যার ফলে তাদের ল্যাকটোজ হজম করতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। তাদের ক্ষেত্রে মাখন এর পরিবর্তে ঘি ব্যবহার করা উত্তম।
অন্যভাবে বলতে গেলে, যেসব রান্নার ক্ষেত্রে অতি উচ্চ তাপমাত্রা প্রয়োজন হয় সেসব ক্ষেত্রে ঘি ব্যবহার করা উত্তম। এবং, যেসব রান্নার ক্ষেত্রে মিল্ক সলিড্স এর ফ্লেভার প্রয়োজন পড়ে, কিন্তু অতিরিক্ত তাপমাত্রার প্রয়োজন পড়ে না, সেসব ক্ষেত্রে মাখন ব্যবহার করা শ্রেয়।
ডিম হচ্ছে আমাদের প্রতিনিয়ত ব্যবহার করা সবচেয়ে পুষ্টিকর খাবারগুলোর একটি। শুধুমাত্র পুষ্টির দিক থেকে নয় ব্যবহারের বিভিন্ন প্রকার দিক থেকেও ডিমের রয়েছে বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্র এবং তারই মাঝে সবচেয়ে সহজ একটি প্রক্রিয়া হল ডিম সিদ্ধ করা।
যখন আপনার হাতে সময় কম থাকে বা আপনি বেশি ঝামেলায় পড়তে চান না তখন খুবই অল্প সময়ের মাঝে একটি ভালো ডিম সিদ্ধ করে ফেললে সেটা সহজেই যেকোন কিছুর সাথে খেয়ে ফেলা যায়। কিন্তু ডিম সেদ্ধ করার ব্যাপারে ছোট কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত যে গুলো এড়িয়ে চললে আপনি সঠিকভাবে এবং ডিমের পুষ্টি বজায় রেখে সহজে ডিম সিদ্ধ তৈরি করতে পারবেন।
প্রথমত আপনার ডিম যদি ফ্রিজ এ থেকে থাকে তাহলে তা বের করে সাথে সাথে সিদ্ধ করতে দেওয়া উচিত নয়। কিছুক্ষণ সময় ডিমের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রুম টেম্পারেচার এ চলে আসার জন্য অপেক্ষা করা উচিত।
দ্বিতীয়ত ডিম সেদ্ধ করার ব্যাপারে কখনোই ফুটন্ত গরম পানিতে ডিম ছাড়বেন না। বরং ঠান্ডা পানিতে ডিম ছেড়ে তারপর সেটি চুলার মাঝে দিয়ে গরম করবেন। যাতে ডিমটি পানির সাথে সাথে ঠান্ডা থাকে ধীরে ধীরে গরম হতে পারে। অনেক সময় গরম বা ফুটন্ত পানিতে হঠাৎ করে ছেড়ে দিলে ক্ষণিকের মাঝে তাপমাত্রার তারতম্যের জন্য ডিম ফেটে যেতে পারে যার মাধ্যমে আপনার ডিম সেদ্ধ করার প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।
তৃতীয়ত ডিম সিদ্ধ করার পর ডিমের খোসা ছাড়ানো পরে প্রয়োজন পড়ে। এক্ষেত্রে খুব ছোট্ট একটি বিষয় অনুসরণ করলে আপনি খুব সহজে ডিমের খোসা ছাড়াতে পারবেন। তা হলো আপনি যখন ডিম সিদ্ধ করবেন তখন পানিতে অল্প একটু বেকিং সোডা (সোডিয়াম বাইকার্বনেট) ছেড়ে দিতে পারেন। এই বেকিং সোডা ডিম সেদ্ধ করে পানিতে মেশানো থাকলে তার ডিমের বাইরে আস্তরণকে যাতে সহজে ছাড়ানো যায় সে ব্যাপারে সহায়তা করতে পারে।
চতুর্থত অনেক সময় ডিমের খোসা ছাড়ানোর সময় আমরা দেখতে পারি ডিমের সাদা অংশ এবং ডিমের খোসার মাঝে একটি পাতলা চামড়ার মত পর্দা বিদ্যমান থাকে। অনেক সময় তাড়াহুড়া বসত আমরা এই পদ্ধতিকে রেখে দেই এবং খোসার সাথে ফেলে দিই না এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে ডিমের খোসা ছাড়ানোর সময় অবশ্যই এ পাতলা পর্দাটি খেয়াল করে উঠিয়ে ফেলতে হবে। কারণ এই পাতলা পদ্ধতি মূলত হচ্ছে ডিমের খোসার একটি অংশ এবং যা খাবারের সাথে গ্রহণ না করায় শ্রেয়।
পঞ্চমত ডিম সেদ্ধ ব্যাপারে কতক্ষণ সময় লাগতে পারে এটি বোঝার একটি সহজ উপায় আছে। তা হলো আপনি পানিতে ডিম রেখে তা চুলে ছড়িয়ে দেওয়ার পর ধীরে ধীরে পানিটি যখন ফুটতে থাকবে তার চার থেকে পাঁচ মিনিট পর আপনি তাপমাত্রা বন্ধ করে দিবেন। তারপর-
এই তিন ধরনের সময় অনুযায়ী আপনি তিন ধরনের ডিম সেদ্ধ তৈরি করতে পারবেন।
বিভিন্ন রকম খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে একটি লেভেনিং এজেন্ট (Leavening Agent) হিসেবে বেকিং সোডা বা বেকিং পাউডার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সাধারণত কেক, বিস্কিট, ব্রেড এবং বিভিন্ন কুকিজ তৈরিতে বেকিং পাউডার, বেকিং সোডা ব্যবহার করা হয়।
যেহেতু এরা এক ধরনের লেভেনিং এজেন্ট, সেহেতু এরা যা করে তা হলঃ খাবারের মাঝে বিদ্যমান থেকে এরা খাবারের ভেতরে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের একটি সরবরাহ তৈরি করে। যার কারণে খাবার ফুলে ওঠে এবং খাবারের একটি সুন্দর আকৃতি বজায় রাখতে সাহায্য করে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বেকিং পাউডার এবং বেকিং সোডার মধ্যে পার্থক্য কি? এবং কোন ক্ষেত্রে কোনটা ব্যবহার করা হয়ে থাকে?
সহজভাবে বলতে গেলে, বেকিং সোডা এবং বেকিং পাউডারের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হল - বেকিং সোডা হচ্ছে সোডিয়াম বাই কার্বনেট নামক এক ধরনের পদার্থ যা মূলত এক ধরনের ক্ষারজাতীয় পদার্থ এবং এই সোডিয়াম বাই কার্বনেট কে সচল বা একটিভ করতে হলে খাবারে অবশ্যই পানি ও কোন না কোন এসিড জাতীয় উপাদান বিদ্যমান থাকতে হবে। তা না হলে সোডিয়াম বাই কার্বনেট কাজ করবেনা। অন্যদিকে বেকিং পাউডার হলো সোডিয়াম বাই কার্বনেট এর সাথে আরো কিছু উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা যার মাঝে এক ধরনের এসিড জাতীয় উপাদান বিদ্যমান থাকে। এর ফলে রান্নার সময় বেকিং পাউডার ব্যবহার করা হলে খাবারের মধ্যে কোন এসিড জাতীয় উপাদান বিদ্যমান থাকতে হবেনা; শুধু পানি বিদ্যমান থাকলেই বেকিং পাউডার অচল হয়ে যাবে এবং কাঙ্ক্ষিত ফলাফল প্রদর্শন করবে।
অন্যভাবে বলা যায় বেকিং পাউডার হচ্ছে বেকিং সোডার সাথে আরো কিছু অতিরিক্ত উপাদান যোগ করে তৈরি করা - যার ফলে খাবারে এসিড জাতীয় পদার্থ থাকার আবশ্যকতা আর প্রয়োজন না হলে তার সাথে মিশিয়ে দিলে কাঙ্খিত ফলাফল পাওয়া যায়। অতএব রান্নায় ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আপনার খাবারের যদি ইতিমধ্যে এসিড জাতীয় উপাদান বিদ্যমান থাকে তাহলে বেকিং সোডা ব্যবহার করলেই হবে। কিন্তু যদি আপনার খাবারে কোন এসিড জাতীয় উপাদান না থাকে তাহলে বেকিং পাউডারই ব্যবহার করা উচিত।
আমরা যারা পাউরুটি কিংবা পিজ্জা বা এই জাতীয় বিভিন্ন খাদ্য দ্রব্য তৈরি করে থাকি তাদের জন্য ভালো মানের ইস্ট একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ইস্ট হচ্ছে এক ধরনের ছত্রাক বিশেষ এবং খাদ্য প্রস্তুত করার সময় এটি যদি খাদ্যের উপাদান গুলোর সাথে দ্রবীভূত করা হয় তখন ইস্ট খাদ্যতে উপস্থিত চিনির সাথে বিক্রিয়া করে কার্বন-ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন করে এবং সেই কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস খাদ্যদ্রব্য টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে আমরা পছন্দ অনুযায়ী আকৃতির খাবার তৈরি করতে পারি এবং ইস্ট এর কারণে সেই আকৃতি বজায় থাকে।
সমস্যা হচ্ছে অনেক সময় বিভিন্ন কারণে আমাদের ব্যবহৃত ইস্ট নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকতে পারে এবং খাবারের নিষ্ক্রিয় ইস্ট ব্যবহার করলে খাবারের গুণগত মান দিক কমে যায়। তাছাড়াও খাবারে কাঙ্খিত আকৃতি কোন ভাবেই পাওয়া সম্ভব হয় না। তাহলে অবশ্যই নিশ্চিত করা উচিত আপনার ব্যবহৃত ইস্ট মান সম্মত কিনা এবং সক্রিয় আছে কিনা।
খুব সহজ একটি পরীক্ষা দ্বারা আপনার ইস্ট এর কার্যকারিতা সহজেই নির্ণয় করা যায়। এক্ষেত্রে আপনি যা করবেন তা হচ্ছে, একটি ছোট বাটিতে করে এক কাপের মত বানিয়ে নেবেন এবং পানিটি হালকা একটু গরম করবেন। পানি যখন মোটামুটি কুসুমগরম তাপমাত্রায় চলে আসে তখন তাতে ১ থেকে ২ চামচ চিনি মিশিয়ে ভালোমতো নেড়ে দিবেন এবং তারপর আপনি যে ইস্ট ব্যবহার করবেন সেখান থেকে একটা চামচের সমপরিমাণ ইস্ট নিয়ে সে চিনি-পানির দ্রবনে মিশিয়ে দিবেন। এরপর কিছুক্ষণ নাড়লে দেখবেন যে যদি আপনার ইস্ট সক্রিয় হয়ে থাকে তাহলে পানিতে বুদবুদ তৈরি হতে থাকবে এবং তা দেখে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার ইস্ট এখন পর্যন্ত সক্রিয় আছে।
অনেক ক্ষেত্রে ইস্ট এর ধরনের ওপর নির্ভর করে এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে কয়েক মিনিট পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে ৩ থেকে ৫ মিনিট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন এবং তারপর দেখবেন যে কোন বুদবুদ সৃষ্টি হয়েছে কিনা। যদি হয় তাহলে বুঝতে পারবেন যে আপনার ইস্ট এখন পর্যন্ত সক্রিয় আছে কিন্তু যদি বুদবুদ সৃষ্টি না হয় তাহলে বোঝা যাবে যে আপনার ব্যবহৃত ইস্ট কোন কারণে নষ্ট হয়ে গেছে বা নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে নতুন করে ফ্রেশ স্কিনে ব্যবহার করাই উত্তম হবে
উপরে উল্লিখিত পরীক্ষার্থীর মাধ্যমে আপনি সহজেই আপনার ইস্ট এর কার্যকারিতা অথবা সক্রিয়তা পরীক্ষা করতে পারবেন।